প্রত্যেক দেশে বিজ্ঞানের ভাষা হলো সার্বজনীন- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বেনজিন রিং সোসাইটির অগ্রযাত্রা। বেনজিন রিং সোসাইটি মহাকাশ গবেষণাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। ২০১৩ সালে ঢাকায় এর জন্ম। বেনজিন সোসাইটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-কে সহযোগিতা দান সঠিক মনে করে। আমরা মনে করি ভবিষ্যত পৃথিবী নিয়ন্ত্রিত হবে মহাকাশ প্রযুক্তি দ্বারা।এটি এদেশের একটি প্রগতিশীল সংগঠন।
এখন বিজ্ঞান সম্বন্ধে দু’চারটি কথা বলে নেয়া ভালো। ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞান ভান্ডারের নাম বিজ্ঞান। বেনজিন সোসাইটি একটি বিজ্ঞানভিত্তিক সংগঠন। বিজ্ঞানের সকল শাখাতেই গবেষণা চালানো আমাদের উদ্দেশ্য। বিজ্ঞানের ক্ষেত্র মূলত দুইটি। যথা-প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থ ইত্যাদি হলো প্রাকৃতিক বিজ্ঞান। অন্যদিকে মানুষের আচার-ব্যবহার এবং সমাজ নিয়ে যে বিজ্ঞান তা সামাজিক বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের ক্ষেত্র দুইটির মধ্যে যেটি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সেখানেই আমাদের সোসাইটির বিচরণ। বেনজিন সোসাইটির আরো দাবি হলো- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের যে অংশে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া। আর বর্তমান দাবি হলো- বাংলাদেশের সরকারি বাজেটে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
রাজনীতিতে বিজ্ঞানের অবদান অপরিসীম। আমরা জানি, রাজনীতি সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য রাজনৈতিক সাহায্যের বিশেষ প্রয়োজন।
আমাদের আরেকটি দাবি লক্ষ্যণীয়- “জেলায় জেলায় বিজ্ঞান আন্দোলন সংস্থা চিহ্নিত করে বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে।” বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের জয়যাত্রার যুগ। বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অভাবনীয় বেগ, সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করেছে দ্রুততর ও বহুমাত্রিক। ঘুচিয়ে দিয়েছে দূর-দূরান্ত। বিজ্ঞানী ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, ল্যাভয়সিয়েকে হত্যা করা হয়েছিল গিলোটিনে। যুগে যুগে আর্কিমিডিস, কোপার্নিকাস, নিউটন, গ্যালিলিও গ্যালিলির মতো বিজ্ঞানীরা বহু সামাজিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল। কৃষি,শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রকৌশল ও যাতায়াতসহ সর্বক্ষেত্র বিজ্ঞানের কল্যাণে হয়েছে সহজতর।
কৃষিক্ষেত্রে মানব সভ্যতার আদিলগ্নে মানুষ তার চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উর্বর জমিতে কৃষিকাজের উপায় উদ্ভাবন করে। কৃষিতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মানুষ আবিষ্কার করেছে ট্রাক্টরসহ নানা কৃষি সরঞ্জাম। কীটনাশকের সাহায্যে পোকামাকড় ও পঙ্গপালের হাত থেকে ফসল রক্ষা করছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রচুর ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে দুরারোগ্য রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। লেজার রশ্মি ও বেতার তরঙ্গ আমরা ব্যবহার করছি। শিক্ষা জগতেও বিজ্ঞান এনেছে বিপ্লব।
টেলিভিশন, ফ্যাক্স, রেডিও, ই-মেইল, ডিশ এ্যান্টেনা ইত্যাদির কল্যাণে বিনোদন জগতে এসেছে সমৃদ্ধি। দ্রুতগামী যানবাহন, বুলেট ট্রেন, উড়োজাহাজ, রকেট ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহগুলো হলো বর্তমানের সর্বাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন নামক এই প্রক্রিয়ার দ্বারা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের খবর, তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করা যায়। মোবাইলে কথা বলা যায় ও ছবিও দেখা যায়। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বাভাসও জানিয়ে দিচ্ছে বিজ্ঞান।
